গুগল এডসেন্স পাওয়ার উপায়-২০২৪ আপডেট
আপনাদের কিছু প্রশ্নের উত্তর আর, এডসেন্স নিয়ে পরীক্ষিত কিছু তথ্য দিয়ে লেখাটি সাজিয়েছি। আশা করছি কাজে লাগবে। অনলাইনে আরো কিছু লেখা খুজে পাবেন যেগুলো আসলে ইংরেজী ব্লগের বাংলা কপি, পরীক্ষিত তথ্য নয়। যেমনঃ ডট কম ডোমেইন(অবশ্যই এর সুবিধা আছে, তবে সেটি ব্র্যান্ডিং এর জন্য) বা, অন্য এড নেটওয়ার্ক ব্যবহার না করাটা এডসেন্স পাওয়ার কোন শর্ত নয়।
- এডসেন্স এর কাজ কি?
এডসেন্স এর কাজ হচ্ছে তৃতীয় পক্ষ হিসেবে যেকোন ব্লগে বিজ্ঞাপন দেখানো। ওরা বিজ্ঞাপনদাতাদের কাছ থেকে বিজ্ঞাপন নেয়, আর বিভিন্ন ওয়েবসাইটে সেই বিজ্ঞাপন দেখায়। মাঝখান থেকে ওরা কমিশন রেখে দেয়।
ব্লগার বা, প্রকাশকদের এতে উপকার হয়, বিজ্ঞাপনদাতাদেরও উপকার হয়। পাঠকদের আগ্রহ অনুযায়ী বিজ্ঞাপন দেখায়, এডসেন্সের সাথে যুক্ত হাজার হাজার বিজ্ঞাপনদাতা আছে।
- কিভাবে এডসেন্স একাউন্ট খুলবো?
এডসেন্স গুগলের প্রডাক্ট। গুগলে একটি একাউন্ট থাকলে সেটাতে জিমেইল, ইউটিউব, ব্লগার সব চালানো যায়। আপনার যদি ব্লগ বা, ইউটিউব চ্যানেল থাকে তাহলেই এডসেন্স একাউন্ট খুলতে পারবেন।
শর্ত হচ্ছে পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিজিটর বা, ভিউয়ার থাকতে হবে, আর নিয়ম ভঙ্গ করা যাবে না। ইউটিউবে ১০০০ সাবস্ক্রাইবার এবং ৪০০০ ঘন্টার ভিউ থাকলে আবেদন করা যায়, ব্লগে কয়েকটি পোস্ট থাকলেই করা যায়। আমি রেকমেন্ড করবো ব্লগে ১৫০০+ শব্দে ৮/১০ টি ইউনিক পোস্ট করতে। ১০/১৫ দিন পরেই আবেদন করতে পারবেন।
এডসেন্স পাওয়ার অর্থ এই না যে হাজার হাজার ডলার পাবেন। তবে, এটা নিশ্চিত যে আয় করার সুযোগ থাকবে। অর্গানিক ভিজিটর যত বেশী থাকবে, ততো বেশী আয় করতে পারবেন। সার্চ ইঞ্জিন থেকে দৈনিক ৩/৪ হাজার ভিজিটর আপনার বাংলা ব্লগে আসলে তখন আরো ভালো করার অনুপ্রেরণা পাবেন। এর আগে টাকার আশা করবেন না।
- এডসেন্স কি বাংলা ব্লগ সাপোর্ট করে?
হ্যা, ভাই- ২০১৭ সাল থেকে সম্ভবত বাংলা ব্লগ সাপোর্ট করে। এর আগে করতো না। তখন প্রথম আলো বা, আনন্দবাজারের মতো পত্রিকাগুলো সম্ভবত Dfp এড দেখাতো (এডসেন্স এর ই একটি প্রগ্রাম)। এখনো অনেকে সেটা পছন্দ করে, সিপিসি এডসেন্স এর চেয়ে বেশী পাওয়া যায়। এখন ঐ প্রগ্রামের নাম হয়েছে Google AD Manager.
যাই হোক বাংলা সাইটেই আমার কাছে ইংরেজীর চেয়ে এপ্রুভাল পাওয়া সহজ বলে মনে হয়। আপনারা নিচের টিপস ফলো করতে পারেন, কাজে লাগবে-
- গুগল এডসেন্স পাওয়ার উপায়?
এডসেন্স এর কিছু নিয়ম আছে, সেগুলো যদি মেনে চলেন আর আপনার সাইটে ভবিষ্যতে আয়ের সম্ভাবনা থাকে(ভালো কনটেন্ট থাকলেই) তাহলে কোন ওয়েবসাইটই এডসেন্স পার্টনার প্রগ্রাম থেকে রিজেক্টেড হয় না।
আমি ৪/৫ টি সাইটে এই পদ্ধতিতে একবারেই এপ্রুভাল পেয়েছি, এটা পরীক্ষিত
শুধু নিচের পাচটি ধাপ অনুসরণ করুন, বাংলা সাইটেই পেয়ে যাবেন-
- প্রথম ধাপ- ওয়েবসাইট তৈরি
একটি ব্লগ/ওয়েবসাইট থাকা লাগবে,(ইউটিউব চ্যানেল থাকলেও হোস্টেড এডসেন্স পেতে পারেন, শুধু ঐ চ্যানেলের জন্য)।গুগোলের ব্লগারে একটি ব্লগ খুলে নিতে পারেন। তবে,হোস্টিং কিনে ওয়ার্ডপ্রেসে ব্লগ খুললেই ভালো করবেন, এটা অনেকভাবে কাস্টমাইজ করা যাবে। ডোমেইন .blogspot হলেও হবে, চাইলে টপ লেভেল যেকোন ডোমেইন কিনে নিতে পারেন, সেটি আপনার সাইটের এডসেন্স পাওয়া সহজ করে দেবে।
টপ লেভেল ডোমেইনের মাঝে .com সেরা, অন্য কিছু নিলে তাঁর পেছনে অন্য কোন কারণ থাকতে হবে। যেমনঃ আপনার ব্লগের টপিকের সাথে মিল আছে এমন কোন TLD নিতে পারেন। ভিজিটরদের মনে .com গেথে আছে, সার্চ ইঞ্জিন সব ডোমেইনকেই একইভাবে দেখে, তবে দর্শকের আগ্রহকে গুরুত্বও দেয়। একই মাণের লেখা ফ্রি ডোমেইনে থাকলে পাঠকেরা সেটিতে কম আগ্রহী হন, মানে আস্থা কম পান(এটা সার্চ রেজাল্টে প্রভাব সত্যিই ফেলে)।
- ওয়েবসাইট তৈরি করার জন্য যা করতে হবে-
ব্লগস্পটে হলেও একটি কাস্টম ডোমেইন ব্যবহার করার চেষ্টা করবেন
ওয়ার্ডপ্রেসেও তাই, ডোমেইন রিসার্চ করে টপ লেভেল ডোমেইন ব্যবহার করবেন
ওয়েবসাইটের ডিজাইন এমন হতে হবে যাতে পাঠকের পড়তে বিরক্তি না লাগে(বিশ্বমাণের হতে হবে না)
সাইটের স্পিড যেন ভালো থাকে, বেশী ফিচার যোগ করার দরকার নাই- সাধারণই ভালো
ওয়েবসাইটের হোম পেজ থেকে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ লেখাগুলো পড়া যাবে বা, প্রথমেই থাকবে এমন ব্যবস্থা করতে পারলে ভালো। সাইট লিংক আর্কিটেকচার নিয়ে বিস্তারিত লেকচার দিলাম না।
- দ্বিতীয় ধাপ- মাণসম্মত কনটেন্ট তৈরি
১৫০০+ শব্দে ১০ টি ইউনিক আর্টিকেল লিখে ফেলুন। কোন ধরণের কপি করার চেষ্টা করবেন না। ইংরেজী থেকে অনুবাদ না করলেও ভালো হয়। কনটেন্ট ইজ দ্যা কিং- এগুলোই আপনার গুগোল সার্চে ভিজিটর বাড়ানোসহ সবকিছুর কেন্দ্রবিন্দুতে।
তাই, এমনিতেই আপনার সবসময় মনঃযোগ দিয়ে লেখা উচিত। একটি বিষয় বেছে নিয়ে সেটা সম্পর্কে বিস্তারিত লিখে ফেলুন। যত গভীরে যাওয়া যায়, লেখাটিকে তত গভীরে নিয়ে চলুন। এস ই ও অপটিমাইজড আর্টিকেল লেখার জন্য নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করুন-
কিওয়ার্ড রিসার্চ করে প্রতি মাসে অন্তত ১০-১০০ সার্চ হয় এমন ২/৩ শব্দের কিওয়ার্ড খুজে বের করুন
ঐ লেখাটা লিখে সার্চ দিয়ে প্রথম পাচটি লেখায় চোখ বুলিয়ে নিন
লেখার আউটলাইন তৈরি করুন, যাতে তাদের চেয়ে ভালো লেখা লিখতে পারেন
এবারে লেখার মাঝে ঐ কিওয়ার্ড টাইটেল, প্রথম হেডিং, প্রথম প্যারাগ্রাফ এবং শেষ প্যারাগ্রাফে ন্যাচারালি ব্যবহার করুন
চেষ্টা করবেন যতটা সম্ভব রিলেটেড সার্চ টার্মগুলো নিয়েও লিখতে
সবগুলো ধাপ অনুসরণ করলে খুব ভালো আর্টিকেল লিখতে পারবেন।
- তৃতীয় ধাপ- ওয়েবসাইটকে এস ই ও ফ্রেন্ডলি করে তোলা
আপনার সাইট যদি ব্লগস্পটে হোস্ট করা হয় তাহলে সুন্দর দেখে একটি কাস্টম থিম লাগিয়ে দিন, আখেরে মঙ্গল হবে। সাইটের স্পিড যাতে ভালো থাকে সেটা খেয়াল রাখবেন, অযথা ভারী করে ফেলবেন না। মেনু, সাইডবার সব ঠিকঠাক করে ফেলুন যাতে দেখতে ভালো লাগে।
এমন না যে আপনাকে সেরা ডিজাইন করতে হবে, ওয়েবসাইটে ভিজিটর আসলেই পাঁচ মিনিট ধরে মুগ্ধ হয়ে ডিজাইন দেখবে, এরকম কেউ দেখে না(ব্লগার/ওয়েব ডিজাইনার ছাড়া)। সব পাঠক চায় তাঁর কাঙ্খিত লেখাটা পড়তে। খেয়াল রাখুন সেটা যাতে করে পড়তে পারে। কম্পিউটারে খুব ভালো দেখাচ্ছে, মোবাইলে খারাপ হলে হবে না। এস ই ও ফ্রেন্ডলি ডিজাইন যেমন হবে-
খুব সাধারণ কিন্তু কার্যকর
ওয়েবসাইট দ্রুত লোড হবে
সাইটের গুরুত্বপূর্ণ লেখাগুলো হোম পেজে পাওয়া যাবে
পাঠক সহজেই ওয়েবসাইটের সব কনটেন্ট খুজে পাবে
এস ই ও সম্পর্কে প্রচলিত ভুল ধারণা হচ্ছে সার্চ ইঞ্জিনের জন্য অপটিমাইজ করা, এটা সত্য নয়। পাঠক বা, ব্যবহারকারীদের কি কনটেন্ট দিচ্ছি এটা সার্চ ইঞ্জিনকে জানানো এবং পাঠকের জন্য ওয়েবসাইটকে সুবিধাজনক করে তোলাই(১ নম্বর র্যাংকিং ফ্যাক্টর) সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন।
- চতুর্থ ধাপ-গুগল সার্চে নিয়ে আসা
গুগোল ওয়েবমাস্টারে সাইট সাবমিট করে দিন। ৮-১০ দিন অপেক্ষা করুন। এর মাঝে আরো কিছু আর্টিকেল লিখে ফেলতে পারেন। একটি ফেসবুক পেজ, একটি টুইটার একাউন্ট তৈরি করে ফেলতে পারেন। কিছু সাইটে গেস্ট পোস্ট করে সেখান থেকে প্রাসঙ্গিক কিছু ব্যাকলিংক আনতে পারেন। এরপর দেখবেন আপনার সাইট সার্চে আসছে, ভিজিটর আসছে।
২ নম্বর ধাপে বলেছিলাম এস ই ও ফ্রেন্ডলি কনটেন্ট লেখার কথা। এটা আবার পড়ুন, যদি কোন ব্যাকলিংক না তৈরি করেন এর পরেও ভালো কনটেন্ট ৪-৬ মাস পরে হলেও ভালো র্যাংক পাবে। আবারো বলছি কনটেন্ট ইজ দ্যা কিং, বাকিরা প্রজা। রাজা মারা গেলো তো সব গেলো। সার্চে র্যাংক করানোর জন্য কয়েকটি ধাপ অবলম্বন করা যেতে পারে-
১৫০০+ শব্দে পারলে ২৫০০+ শব্দে ১০টি ইউনিক আর্টিকেল লিখুন
একটি ফেসবুক পেজ, টুইটার পেজ, পিন্টারেস্ট একাউন্ট তৈরি করে তিনটাতেই লেখা শেয়ার করুন
ভালো সাইটে কিছু গেস্ট পোস্ট করে ব্যাকলিংক তৈরি করুন, এই সাইটেও লিখতে পারেন
কয়েকদিন(৫/৭ দিন) অপেক্ষা করুন, কিছু লেখা সার্চে আসবে
লেখার মাণ সত্যিই ভালো হয়, তাহলে এগুলো এক সময় বা, প্রথমেই প্রথম পেজে চলে আসবে। এডসেন্স এপ্রুভাল পাওয়ার এটাই প্রধান শর্ত। সার্চের ভিজিটর না থাকলে এডসেন্স পেয়েও কোন লাভ নেই। মনিটাইজেশনের জন্য অর্গানিক ভিজিটর লাগবেই।
- পঞ্চম ধাপ- এডসেন্স এর আবেদন এবং এপ্রুভাল
এবারে এডসেন্স এর জন্য এপ্লাই করে ফেলুন- এই যে লিংক । কয়েকদিন অপেক্ষা করুন, আশা করছি হতাশ হবেন না।এডসেন্স পেয়ে গেলেন মানে আপনি কোটিপতি হয়ে গেলেন ব্যাপারটা মোটেও এমন না । মনঃযোগ দিয়ে লিখতে থাকুন, শিখতে থাকুন আপনাকে দিয়ে কিছু হতে পারে। সাধারণত ১৫ দিনের মধ্যে ওয়েবসাইট দেখে এডসেন্স তাদের সিদ্ধান্ত জানায়। আপনাকে যা করতে হবে-
এডসেন্স এর কোড সাইটে বসাতে হবে। <head>এর মাঝে যেকোন জায়গায়</head>
চুপচাপ বসে থাকুন অথবা, আরো কিছু লেখা লিখুন
এপ্রুভাল পেয়ে গেলে সাইটের যেখানে ইচ্ছা এড দেখাতে পারবেন
হ্যাকিং, ক্র্যাকিং, উগ্র যৌনতা, বেটিং, মুডি ডাউনলোড লিংক(অনুমতি ছাড়া) এগুলো দিলে এডসেন্স পাবেন না
কপি করা লেখা প্রকাশ করলেও পাবেন না
হেড ট্যাগের মাঝে অটো এডের কোড দিলে এডসেন্সের ইচ্ছামত যেখানে জায়গা পাবে এড দেখাতে থাকবে। নিজের ইচ্ছামতো দেখাতে চাইলে এড ইউনিট তৈরি করে যেমন ধরণের ইচ্ছা তেমন ধরণের এড নিজের পছন্দমতো স্থানে দেখাতে পারবেন। এই পাঁচটি ধাপ অনুসরণই গুগল এডসেন্স পাওয়ার উপায়।
কোন ধরণের সাইট বেশী এপ্রুভাল পায়
এইসব বৈশিষ্ট্য থাকলে এডসেন্স এপ্রুভাল বেশী পায়–
টপ লেভেল ডোমেইন
ব্লগস্পটে কাস্টম টেমপ্লেট
আরো ভালো ওয়ার্ডপ্রেসের ওয়েবসাইট
বড় বড় আকারের ভালো মাণের আর্টিকেল আছে এমন সাইট
সার্চ থেকে কিছু ভিজিটর আছে এমন সাইট- এটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উপস্থিতি আছে এমন সাইট
এডসেন্স এপ্রুভাল পাওয়াটা সহজ যদি আপনি গুগলের সব পলিসি মেনে চলেন। পলিসি না মানলে গুগল এডসেন্স পাওয়ার উপায় নেই। শেষের দিকে বিকল্প নেটওয়ার্ক নিয়েও বলেছি।
- পেমেন্ট পাওয়ার পদ্ধতি
একাউন্টে টাকা থাকলে পেমেন্ট পাওয়া কোন ব্যাপার না। তবে, একাউন্টে টাকা জমা করাটা বেশ কঠিন। ১০ ডলার আয় হলে এড্রেস ভেরিফাই করার জন্য পিন পাঠায়। আর, ১০০ ডলার হলে একাউন্টে উল্লেখ করা পদ্ধতিতে পেমেন্ট দিয়ে দেয়।
যেকোন ব্যাংকের একাউন্টে বাংলাদেশ থেকে টাকা তোলা যায়, এছাড়া চেকে টাকা নেয়ার পদ্ধতিও আছে। সম্ভবত Payoneer এর মাধ্যমে নেয়া যায় না। রকেটের একাউন্টেও আমি টাকা পেয়েছি। ডাচ বাংলা ব্যাংকের একাউন্ট হিসেবে দেখাতে হয়।
- এডসেন্স চিঠি
একাউন্টে ১০ ডলার জমা হলে আপনার দেয়া ঠিকানায় এডসেন্স চিঠি পাঠায়। ঐ চিঠিতে শুধু একটি পিন নম্বর থাকে। সাধারণত ২ থেকে ৪ সপ্তাহের মাঝে চিঠি চলে আসে। বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলে অনেক সময় চিঠি আসতে দেরী হয়। এমনকি কখনো কখনো খুজেই পাওয়া যায় না।
আমরা সবাই ডাক বিভাগের কথা জানি। বাস্তবতা মেনে নেয়া ছাড়া কিছু করার নেই। তবে, কোন কারণে চিঠি না পেলে আইডি কার্ড দিয়ে ভেরিফিকেশনের পদ্ধতি আছে। তাই, চিন্তার কোন কারণ নেই। এই ব্যাপারে গুগলের ব্লগ থেকে পড়ুন– সবচেয়ে সঠিক তথ্য পাবেন।
- গুগল এডসেন্স এর বিকল্প
বাংলাদেশী ব্লগার এবং ওয়েবমাস্টার যারা তারা সাধারণত এডসেন্স এর বাইরে কিছু ভাবতেই পারেন না। এর একটি বড় কারণ হচ্ছে বাংলাদেশে এফিলিয়েট মার্কেটিং এর সুযোগ খুব একটা নেই।
এমাজন এর প্রডাক্ট বাংলাদেশে বিক্রি হয় না, দারাজ, ইভ্যালির মতো কোম্পানিগুলোর ভালো এফিলিয়েট প্রগ্রাম আছে বলে আমার জানা নেই। চলুন কিছু বিকল্প দেখে নেই যেগুলোতে আরো বেশী আয় করা যাবে-
এফিলিয়েট মার্কেটিং
নিজের প্রডাক্ট বিক্রি
বিকল্প এড নেটওয়ার্ক
এফিলিয়েট মার্কেটিং
- নিজের প্রডাক্ট বিক্রি
এফিলিয়েট সাইটের নীতিমালা প্রায়ই চেঞ্জ করে, এতে আয় কমে যেতে পারে। নিজের প্রডাক্ট বিক্রি করতে পারলে সবচেয়ে বেশী আয় করতে পারবেন এতে কোন সন্দেহ নেই। অনেক ব্লগারেরাই সেটা করেন।
উদাহরণ হিসেবে বলা যায়- রকমারি বই বিক্রির সাইটে ব্লগ আছে, সেটার উদ্দেশ্যে তাদের বই বিক্রি বাড়ানো। অনেকেই ফেসবুক পেজ এবং গ্রুপের মাধ্যমে পণ্য বিক্রি করেন। তারা তাদের টার্গেট গ্রুপের কাছে পৌছাতে সক্ষম হন না বেশীরভাগ সময়।
সুন্দরবনের মধু লিখে যে সার্চ দিচ্ছে, তাকে যদি আপনার পেজ প্রথমে দেখাতে পারেন আর, সেখানে মধু বিক্রি করেন। তাহলে, খুব সহজেই বিক্রি করতে পারবেন, ঐ ভিজিটর কিনতে চায়।
বিকল্প এড নেটওয়ার্ক
আগে যে দুটি বললাম- এফিলিয়েট আর, নিজের পণ্য বিক্রি এতে আপনাকে ব্লগ লিখে লোকজনকে ইনফ্লুয়েন্স করতে হবে কেনার জন্য। কিন্তু এগুলো না করেও শুধু ভিজিটর পেলেই এডসেন্সে আয় করা যায়।
আপনারা হয়তো জানেন না এডসেন্স বিজ্ঞাপনদাতাদের কাছ থেকে বড় অংশ রেখে আপনাকে ছোট অংশ দেয়। এর চেয়ে বেশী আয় করার কিছু পদ্ধতি আছে, স্বীকার করছি বাংলা সাইটের জন্য গুগল এডসেন্স এর চেয়ে ভালো বিকল্প নেই। তবে, নিচে কিছু নাম লিখছি যারা আরো বেশী টাকা দেয়-
Google Ad Manager
Ezoic
Mediavine, Adthrive
- আরো কিছু প্রশ্নের উত্তর
- প্রশ্নঃ গুগল এডসেন্স এর কোন নিয়ম সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ?
উত্তরঃ গুগল একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, তাই আপনার সাইটে এড দেখিয়ে তাদের লাভ না হলে এড দেখাবে না – সাইটের মাণসম্মত ভিজিটর থাকাটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এর জন্য ইউনিক কনটেন্ট(কপি মুক্ত), একটি বিষয় নিয়ে বিস্তারিত লেখা, মানুষ যা সার্চ করে সেগুলো নিয়ে লেখা , দুই নম্বরি কোন পদ্ধতিতে ভিজিটর না আনা এবং পাইরেটেড মুভি ডাউনলোড লিংক না দেয়ার যে নিয়মগুলো আছে এগুলো মেনে চলা দরকার।
- প্রশ্নঃ টাকা আয় করতে পারলে গুগল এডসেন্স এর পেমেন্ট কিভাবে পাব?
উত্তরঃ যদি আপনি টাকা আয় করতে পারেন তাহলে পৃথিবীর কোন বড় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আপনার টাকা আটকে রাখবে না। এডসেন্স এর টাকা রকেটেও পাওয়া যায়(বিকাশ যেহেতু ব্রাক ব্যাংক এর একাউন্ট দেয় না, তাই বিকাশে পাওয়া যায় না), এটা নিয়ে চিন্তার কিছু নেই। যেকোন সরকারী বা, বেসরকারী ব্যাংকে একাউন্ট থাকলেই টাকা পাবেন- সময় কম বেশী লাগতে পারে।
- প্রশ্নঃ এডসেন্স এর পিন ভেরিফিকেশন কিভাবে করব, আমার বাড়িতে চিঠি আসে না?
উত্তরঃ আমি নিজে আইডি কার্ড দিয়ে ভেরিফিকেশন করি নাই, তবে অনলাইনে অনেকেই লিখেছেন যে তারা চিঠি না পেয়ে ন্যাশনাল আইডি কার্ড দিয়ে এড্রেস ভেরিফাই করতে পেরেছেন। এটা নিয়েও চিন্তার কিছু নাই। পোস্টম্যানকে বলে রাখবেন, পেতেও পারেন। ১০ ডলার হলে গুগল পিন পাঠায়, আপনাকে সেটা ইমেইল করে জানানোর কথা।
- প্রশ্নঃ গুগল কি বাংলা ব্লগ সাপোর্ট করে?
উত্তরঃ হ্যাঁ, ভাই করে। ২০১৭ সাল থেকে ঘোষণা দিয়ে বাংলা ব্লগে গুগলের বিজ্ঞাপন দেখাচ্ছে। এর আগেও বাংলাদেশের প্রথম আলো, বিডিনিউজ ২৪ এরা এডসেন্স এর বিজ্ঞাপন দেখাতো। Doubleclick নামে গুগলের আরেকটি প্রগ্রাম আছে, সেটির মাধ্যমে অথবা, ওদের ইংরেজী সাইটের মাধ্যমে দেখাতো। আমি নিজেও তখন ঐ পদ্ধতিতে বিজ্ঞাপন দেখিয়েছিলাম। এখন এসব নিয়ে চিন্তা নেই, নিশ্চিন্তে নিজের ভাষার সেরা আর্টিকেল লিখে প্রকাশ করুন। আমার অভিজ্ঞতা বলে, ইংরেজী সাইটের চেয়ে বাংলাতে এডসেন্স এপ্রুভাল পাওয়া সহজ।
- প্রশ্নঃ গুগল এডসেন্স ইউটিউবে থাকলে কি ব্লগে ব্যবহার করা যাবে?
উত্তরঃ না, যাবে না। প্রতিটি ব্লগের জন্য আলাদাভাবে আবেদন করে এপ্রুভাল পেতে হবে। ইউটিউবের এডসেন্স হচ্ছে Hosted Adsense. ইউটিউবে এবং ব্লগে যে টাকাটা পাওয়া যায় সেটিও সমান নয়(গুগল এবং আপনার পাওয়ার রেশিও)। তাছাড়া, ব্লগের সিপিসি বাংলাদেশের জন্য ইউটিউবের প্রায় তিন গুন(নিজের অভিজ্ঞতা এবং অন্যদের বক্তব্য বিশ্লেষণ করে বলছি)।
একইভাবে, ব্লগে এডসেন্স থাকলেও সেটি ইউটিউব চ্যানেলে ব্যবহার করতে পারবেন না। ইউটিউবের নিজস্ব নীতিমালা রয়েছে সেটি অনুসরণ করেই আপনাকে এডসেন্স এ চ্যানেল যুক্ত করতে হবে। বিকল্প কোন পদ্ধতি নেই।
উপরে যেগুলো বললাম সব কিছুর চেয়ে বড় ভূমিকা পালন করে ইউনিক কনটেন্ট আর ভিজিটর। এডসেন্স এর পার্টনার হওয়া খুবই সহজ, যারা সোনার হরিণ বলেন তারা মিথ্যা বলেন। বাংলা সাইটেও এখন কোন সমস্যা না। তবে, এডসেন্স এপ্রুভাল পেলেই যে অনেক টাকা আয় করতে পারবেন ব্যাপারটা এমন না।
আপনার সাইটে ভালো কনটেন্ট আর ভালো ভিজিটর থাকলে গুগল নিজেই আগ্রহী হবে এড দেখাতে, এপ্রুভ না করার তো প্রশ্নই ওঠে না। সেটাতে আয়ও হবে। শুধু আর্টিকেল লিখেও আয় করা যায়, সেজন্য আর্টিকেল লেখার নিয়ম জানতে হবে। আরো কিছু জানতে চাইলে কমেন্ট করুন।